লোহাগাড়ার ছেলে ক্ষুদে বিজ্ঞানী প্রকৌশলী নোবেল’র জাতীয় পুরষ্কার লাভ

মোহাম্মদ : ফয়সাল.....

বাংলাদেশে এই প্রথম রোবট ফোর্স’র মাধ্যমে অগ্নিনির্বাপন, অগ্নিকান্ড থেকে মানুষকে বাঁচানো এবং অগ্নিকান্ডের স্থানে দ্রুত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাঠাতে রোবট ফোর্স উদ্ভাবন করে জাতীয় পুরষ্কার লাভ করেছেন লোহাগাড়ার কৃতি সন্তান চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রনিক্স বিভাগের অষ্টম পর্বের মেধাবী ছাত্র ক্ষুদে বিজ্ঞানী জাহেদ হোসাইন নোবেল। গত ১৬ জুন রবিবার সন্ধ্যা ৬ টায় ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত জাতীয় স্কিল কম্পিটিশনের চূড়ান্ত পর্বে আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল তাঁর হাতে এ পুরষ্কার তুলে দেন। উক্ত স্কিল কম্পিটিশনের চূড়ান্ত পর্বে মোট ৫৪টি প্রজেক্ট অংশগ্রহণ করে। এতে প্রকৌশলী জাহেদ হোসাইন নোবেলের উদ্ভাবিত প্রজেক্টটি ৩য় স্থান অধিকার করে জাতীয় পুরস্কার লাভ করে । কৌশলী নোবেল চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের হয়ে এ কম্পিটিশনে অংশগ্রহণ করে। প্রজেক্টে তাঁর সহযোগী ছিলেন একই বিভাগের ছাত্র ফাহিম জাওয়াদ ও ইমতিয়াজ বিন সোয়াইব। বাংলাদেশ রোবট ফোর্স এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানাতে গিয়ে উদ্ভাবক প্রকৌশলী নোবেল জানান, আসলে অগ্নিকান্ড থেকে মানুষদের বাঁচাতে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিসের জন্য এটি উদ্ভাবন করা হয়েছে। এই রোবটটি রিমোট কন্ট্রোলারের সাহায্যে এক কিলোমিটারের দুরত্ব থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন একজন ফায়ারম্যান। অগ্নিকান্ডে যে কালো ধোঁয়া সৃষ্টি হয় ঈড়ড়ষরহম সিস্টেম ব্যবহার করে ফিল্টার করে দেবে রোবটটি নিজেই। এছাড়াও অগ্নিকান্ডের স্থানে রোবটটি প্রয়োজনীয় খাবার, মেডিসিন ও মাস্ক নিয়েও যেতে পারে । রোবট’টির বহন ক্ষমতা ১৮ কেজি । এটি বাংলাদেশের বাজারে আনতে মাত্র ১০ লক্ষ টাকা প্রয়োজন হবে। এটি সম্পূর্ণ দেশী প্রকৌশলী এবং দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি করা সম্ভব। এদিকে, প্রকৌশলী জাহেদ হোসাইন নোবেল ২০১৫ সালে লোহাগাড়া উপজেলা সদরের দক্ষিণ সাতকানিয়া গোলামবারী সরকারী মডেল উচ্চ বিদ্যায়লের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি পাশ করে। ২০১৫-২০১৬ সেশনে চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রনিক্স বিভাগে ভর্তি হন। এরপর কৃতিত্বের সাথে ৭টি পর্ব সমাপ্ত করে। সে লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ মালপুকুরিয়া গ্রামের চুন্নু মিয়া বাড়ির মৃত জাকের হোসাইন কোম্পানির ২য় পুত্র। জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্তিতে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ক্ষুদে বিজ্ঞানী নোবেল বলেন, ছোট বেলা থেকেই আমার একটা ইচ্ছা ছিল নতুন কিছু উদ্ভাবন করে দেশের জন্য কিছু করার। আর সে লক্ষ্যে নিজেকে কারিগরি শিক্ষায় মনোনিবেশ করি। তাই ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ইলেকট্টনিক্স বিভাগে ভর্তি হয়। তৃতীয় সেমিস্টার থেকেই আমি রিসার্চ শুরু করি স্বপ্নের ড্রোন নিয়ে। রিসার্চ করার সময় বাবাই আমাকে প্রথম অনুপ্রেরণা দেন। পরে পরিবারের সবার সাপোর্টে ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতে থাকি আমি। ছোট বেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল প্রকৌশলী হয়ে বাংলাদেশে কিছু একটা উদ্ভাবন করবো। আমার উদ্ভাবনটি যেন বাংলাদেশের মানুষের প্রয়োজনে পড়ে এবং বাংলাদেশেই যেন তৈরি করা যায়। অবশেষে আমি ইনশাল্লাহ সফল হয়েছি। এদিকে, প্রকৌশলী জাহেদ হোসাইন নোবেলের প্রথম উদ্ভাবিত “লাইফ সেভিং ড্রোন” প্রজেক্টটি স্কিল কম্পিটিশন- ২০১৭তে ইনস্টিটিউট পর্যায়ে প্রথম স্থান অর্জন করে। একই সালে “লাইফ সেভিং ড্রোন” প্রজেক্টটি স্কিল কম্পিটিশন- ২০১৭ তে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পর্যায়ে ৩য় স্থান অর্জন করে। একই সালে প্রজেক্টটি ঢাকায় অনুষ্ঠিত আইসিটি এক্সপো- ২০১৭ তে বাংলাদেশে জাতীয় পর্যায়ে ৭ম স্থান অর্জন করে। এরপর ২০১৮ সালে তাঁর দ্বিতীয় উদ্ভাবিত “বাংলাদেশ রোবট ফোর্স” প্রজেক্টটি স্কিল কম্পিটিশন-২০১৮ তে ইনস্টিটিউট পর্যায়ে প্রথম স্থান, স্কিল কম্পিটিশন- ২০১৮ তে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পর্যায়ে প্রথম স্থান, ৫ম চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা- ২০১৮ তে প্রথম স্থান এবং সর্বশেষ গত ১৬ জুন জাতীয় স্কিল কম্পিটিশন- ২০১৮ তে তৃতীয় স্থান অর্জন করে জাতীয় পুরষ্কার লাভ করে।

Comments

Popular posts from this blog

ফেসবুকে আসছে অর্থ আয়ের সুযোগ

কলাউজান ইউনিয়ন ছাত্রলীগ এর উদ্যোগে সাবান,হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে